কলকাতা ভ্রমন: পর্ব চার
গিরীশ মঞ্চ:
গিরিশ মঞ্চ হলো কলকাতার বাগবাজার অঞ্চলের একটি নাট্যমঞ্চ। ১৯৮৬ সালের ০১ জুলাই পশ্চিমবঙ্গের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসু মহোদয় এই মঞ্চটির উদ্বোধন করেন। মঞ্চটির নামকরণ হয়েছে বিশিষ্ট নাট্যকার গিরিশচন্দ্র ঘোষের নামে।
ওয়েস্ট বেঙ্গল ডাইরেক্টরেট এন্ড স্টেট কাউন্সিল ফর টেকনিক্যাল এডুকেশন এর একটি সাংস্কৃতিক অংগ-সংগঠন হলো রিক্রিয়েশন ক্লাব। সংগঠনটির ৬৩তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপিত হলো গত ১১ অক্টোবর ২০২৩ খ্রি. ঐতিহাসিক গিরীশ মঞ্চে। এই অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের একজন লেখক হিসেবে আমি সশরীরে উপস্থিত ছিলাম। আমার সাথে আরো ছিলেন অধিদপ্তরের অতিরিক্ত অধীকর্তা শ্রীমতি বিদিশা মুখার্জী, বিখ্যাত আবৃত্তিশিল্পী কাজল সুর এবং অধিদফতরের প্রাক্তন অধীকর্তা শ্রী সজল দাশগুপ্ত মহাশয়।
পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যসভার উচ্চশিক্ষা ও স্কুল শিক্ষামন্ত্রী শ্রদ্ধেয় ব্রাত্য বসু এবং নারী ও শিশু-কল্যাণ মন্ত্রী শশী পাঁজা মহাশয়ের অংশগ্রহণ করার কথা ছিল।
অপরিহার্য কারণে অনুষ্ঠানে আসতে না পারায় তারা উভয়েই উপস্থিত দর্শক-শ্রোতাদের উদ্দেশ্যে লিখিত বার্তা পাঠিয়েছিলেন।
অনুষ্ঠান পরিকল্পনায় ছিল অতিথিদের অংশগ্রহণে সংক্ষিপ্ত আলোচনা, নৃত্যানুষ্ঠান, অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কর্মচারীদের সম্মাননা প্রদান, অস্বচ্ছল ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের আর্থিক সহায়তা প্রদান এবং সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক জনাব সুনিত রায়চৌধুরী রচিত নাটক ‘আজব দেশের তাজ্জব কিসসা’ এর নান্দনিক মঞ্চায়ন।
সংগঠনের সভাপতি ড. অনিন্দিতা গাঙ্গুলী এবং সঞ্চালক শান্তনু চট্টোপাধ্যায় এর অসাধারণ সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানটি ভীষণ মনোমুগ্ধকর হয়ে ওঠেছিল।
নাটকটির কেন্দ্রীয় চরিত্রে অসাধারণ অভিনয় করেছেন অভিনেত্রী দীপান্বিতা ঘোষ, অমিত মিত্র ও সুনীত রায়চৌধুরী।
পিন পতন নীরবতায় হল ভর্তি দর্শক-শ্রোতাবৃন্দ পুরো অনুষ্ঠানটি উপভোগ করেন যা আমাকে ভীষণভাবে মোহিত করেছে। সংগঠনটির বিভিন্ন স্তরের শিল্পীদের উষ্ণ আতিথেয়তা ভুলবার নয়।
কিছু বিশেষ বৈশিষ্ট্যের কারণে অনুষ্ঠানটি বাংলাদেশের প্রথাগত অনুষ্ঠান থেকে ভিন্ন ছিল। পুরো অনুষ্ঠান জুড়ে কেউ মোবাইল ফোন বের করেনি, মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ছবি তোলার চেষ্টাও করেনি। একজন মাত্র ফটো ও ভিডিওগ্রাফার এই দুরুহ কাজটি সম্পন্ন করেছেন। কাঙ্ক্ষিত ব্যক্তি ছাড়া অকারণে কেউ মঞ্চে ওঠেনি। সম্পূর্ণভাবে পরিপাটি ও মার্জিত একটি সফল অনুষ্ঠান উপহার দিতে পেরেছিল আয়োজক কমিটি।
বন্ধুবর উর্ধ্বতন শিক্ষা কর্মকর্তা ও টিভি অভিনেত্রী দীপান্বিতা ঘোষ এবং অমিত মিত্রের প্রাণময় আমন্ত্রণে সেদিনের অনুষ্ঠানে আমার অংশগ্রহণ সম্ভব হয়েছিল।
তাদের দু'জনের প্রতি এবং পুরো আয়োজক কমিটির সকল সুহৃদের প্রতি আমার নিজের পক্ষ থেকে এবং বাংলাদেশের সমগ্র লেখক সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে বিনম্র শ্রদ্ধা, শারদীয় শুভেচ্ছা, ভালোবাসা ও কৃতজ্ঞতা রইলো...
ইমরুল কায়েস/কলকাতা
১৩ অক্টোবর ২০২৩ খ্রি.
No comments:
Post a Comment