Tuesday, August 22, 2023

ওয়াদুদুর রহমান পান্না

 


ওয়াদুদুর রহমান পান্না
ই ম রু ল  কা য়ে স

মৃত্যুই কি সবকিছুর শেষ?
সীমানার ওপারে চলে যাওয়াই কি মুক্তির মোক্ষম গন্তব্য?
তাহলে কেন এই তাড়াহুড়ো, অসময়ে অসমাপ্ত প্রস্থান!
জনতার আগ্রহ শেষ না হতেই জীবনের খেলা হলো শেষ।

আচমকাই চলে গেলেন ওয়াদুদুর রহমান পান্না ভাই!
তার তো আরো অনেক কিছু দেওয়ার ছিল?
আমাদেরও পাওয়ার ছিল অনেক, দেওয়ারও ছিল তাকে,
অনেক কিছু বলার ছিল, করার ছিল ভালোবাসার পঙক্তিমালা লিখে।

প্রেসক্লাবে অঝোর শ্রাবণ, শুনসান নীরবতা হনন করছে মননের কষ্ট।
জন্মভূমির চেয়ারগুলো দুঃখে কাতর, বিরহী খুলনা বিলাপ করছে,
ব্যথার তিমির গিলে খাচ্ছে জোহরা খাতুন শিশু বিদ্যানিকেতন।
ছোট্ট ছোট্ট ফেরেস্তাদের চোখের অশ্রু কে মুছাবে?
কে চালাবে বেতার পাড়ায় কচি-কাচার আসরগুলো?

মৃত্যুই যদি জীবনের শেষ হয়, মৃত্যুকেও জয় করে অবিনশ্বর স্মৃতি।
স্মৃতির বাতিঘরে অমরত্বের অনল শিখা জ্বেলে
মনের মন্দিরে বেঁচে রবে আমাদের পান্না ভাই। 

সত্যে অটল, অবিচল পথচলা, সাহসী কলম ও দৃঢ় ব্যক্তিত্ব নিয়ে
হঠাৎ তিনি হয়ে গেলেন স্মৃতির জলজ্যান্ত পোস্টার।

২২ আগস্ট ২০২০ খ্রি.
খুলনা

Monday, August 21, 2023

ওয়াসফিয়া নাজরীন

 

ওয়াসফিয়া নাজরীন
ই ম রু ল কা য়ে স

নারী
তুমি- পাহাড় বেয়ে উপরে ওঠো শুনে, ভীষণ অবাক হই
কে তোমাকে ঘরের বাহির ডাকে?
দেশের নিশান, নারীর হাতে, পাহাড় চূড়ায় দেখে , অবাক হয়ে ভাবি...
পাহাড় তোমায় কীসের নেশায় ডাকে?

নারী
তুমি - দেশের নিশান ওড়াতে ছুটেছো এশিয়া থেকে ইউরোপ,
ইউরোপ থেকে আফ্রিকা, ওসেনিয়া, আমেরিকা।
এভারেস্ট চূড়া ছুঁয়েছে তোমায়, তুমি ছুঁয়েছো কিলিমানজারো,
একোনকাগুয়া, কারাস্তনেজ, পুনাক জায়া, এলব্রুজ।
সবার শিখরে পতাকা উঁচিয়ে লিখেছো একটি নাম, বাংলাদেশ।
তোমাকে ঘিরে জাতির উচ্ছ্বাস, গর্ব অনিঃশেষ।

নারী
তুমি - পাহাড় চূড়ায় ছড়িয়ে দিয়েছো লাল সবুজের নাম
অবাক বিশ্ব তোমাকে চিনেছে ’পাহাড়-কন্যা’ নামে
দেশের পতাকা উঁচিয়ে ধরে নিজের সীমানা ছাড়ি
সীমাবদ্ধতার দেওয়াল ভেঙ্গে বুঝিয়েছো পারে নারী!

নারী
লুরি পর্বত, আইল্যান্ড পিক তোমার কাছে নত
সাত মহাদেশ টিক্কা দেওয়া পাহাড় রয়েছো যতো।
সাহসী কন্যার খেতাব দিতে ন্যাশনাল জিওগ্রাফী
’বর্ষসেরা অভিযাত্রি’র মুকুট দিয়েছে তোমার মাথায় রাখি।
বিশ্ব মাতিয়ে তুমি হয়েছো ব্রাক শুভেচ্ছা দূত
মনন থেকে দূর করেছো প্রতিবন্ধকতার ভূত।

সাবাস নারী!
সাবাস তোমায়, এগিয়ে চলো সামনে।

২৭ অক্টোবর ২০২২ খ্রি.
খুলনা

Tuesday, August 15, 2023

দুরন্ত সাধ

দুরন্ত সাধ
ই ম রু ল  কা য়ে স

মনে হয় ডানা মেলে উড়ে যাই আকাশে
পেড়ে চাঁদা খেলা করি বৈশাখি বাতাসে
মধুকর হয়ে বসি বকুলের শাখাতে
এঁকে দেই স্বপ্নটা ফুল আর পাতাতে।

মনে হয় মেঘ হয়ে খুঁজে ফিরি সুখটা
বাজপাখি হয়ে ফুড়ি আকাশের বুকটা
সারাদিন লেখাপড়া রুটিনের ঝাকাতে
মনে হয় চলে যাই মামা বাড়ি ঢাকাতে।

১৪ মে ২০০৭ খ্রি.
৩১ বৈশাখ ১৪১৪
খুলনা



পুলিশ অফিসার

 

পুলিশ অফিসার
ই ম রু ল  কা য়ে স

তোমায় দেখে সটকে গেলো গৌর চাচার নষ্ট ছেলে
বুঝি তুমি কেউ একজন অন্যরকম হর্তা-কর্তা
তুমি আসছো জানতে পেরে ফাঁকা হলো মহসিন মোড়
বুঝি তুমি কেউ একজন সমীহ করে আমজনতা।

রোমিওরাও বুঝে গেছে তুমি আছো, তুমি আসছো
অবাঞ্চিত ভিড় দেখি না এই শহরের স্কুল গেটে
তুমি আছো বলেই কাছে আর আসে না চোর বাটপাড়
গুণ্ডা-বদমাশ সটকে গেছে, অন্তরালে চলে গেছে টপটেরর 
সবাই জানে তুমি উর্ধ্বে সকল ভয়ের, সকল লোভের 
নষ্ট হাতে পরাও তুমি হাতকড়া যে যখন-তখন।

ভিতোর তোমার কতোটা কঠিন, ক’জন জানে
যখন শুনি তোমার জন্য প্রহর গোনে অভাগিনী
অভাগীদের কাছে তুমি আলোর কন্যা ‘নাইটিঙ্গেল’
তুমি নাকি নষ্ট-প্রাণে সলতে জ্বালাও, বেঁচে থাকার স্বপ্ন দেখাও।
আঁধো আলোয় তুমি ওদের গল্প শোনো, গল্প শোনাও-
ওদের কাছে তুমি নাকি কষ্টচোষা নীলকণ্ঠ
কল্পনাকে হার মানানো গল্প লেখো চোখের জলে।
নিজের হাতে জাগিয়ে তোলো মানব বিবেক ছন্দতালে।

সবাই বলে, তোমার গালে দুধে-আলতা; সাধ্বী সুন্দর, অনুপমা।
নানান ছলে নানান মানুষ নিত্য তোমার কাছে ঘেঁষে,
কাছে এসে মুচকি হেসে দেখে তুমি অন্য মানুষ!
কাঁকন হাতে দৃঢ়চেতা অন্য নারী, লাল-খয়েরি লিপিস্টিকে উর্দিপরা
একটি হাতে ধরে আছো হরণোন্মুখ নারীত্বকে
অন্যহাতে মানব বিবেক, মুষ্টিবদ্ধ শক্ত হাতে।

সবাই বলে তুমি নাকি শুভশ্রী; গায়ের রঙটা ফর্সা বলে 
পানির দরে বাড়তি একটু সুবিধা পাও!
উপর দিকে উঠতে হলে গুণ লাগে; গুণের সাথে নুন মাখানো সাহস লাগে।
আঁধার রাতে সবাই যখন কোলবালিশে আদর ছড়ায়
তুমি তখন ধাওয়া করো সন্ত্রাসীদের; চোর-বাটপাড় জেলে ঢুকাও।
রোদ-বৃষ্টি আঁচড় কাটে তোমার শরীর; তবু তুমি দ্বীপ্তি ছড়াও
ধুলোর শহর অবাক চোখে দেখে তোমার রূপ মিশানো গুণের বহর!


সাবাস পুলিশ! স্যালুট তোমায়!
কেড়ে নিলে আত্মভোলা মগ্নকবির ছন্নছাড়া কল্পনাকে
সামনে চলো গহীন সুদূর, পার হয়ে সব নিন্দাবৃষ্টিি।
আশীষ তোমার সাথে আছে বসন হয়ে
সাথে থাকবে কবির কলম, ভালোবাসা, শুভদৃষ্টি।

১৭ জুলাই ২০১৭ খ্রি.
খুলনা

 

 


মুজিব বাঙালির নিশ্বাসে, বিশ্বাসে

 

মুজিব বাঙালির নিঃশ্বাসে, বিশ্বাসেে
ই ম রু ল  কা য়ে স 

নিঃশ্বাসের চিরচেনা অলিগলিতে যার নিরন্তর বসবাস
বিশ্বাসের গোপন প্রাসাদে যার একান্ত আনাগোনা
স্মৃতির সোনালি আকাশ, জুড়ে ঘন সাদা মেঘের মতো
মিশে আছে যে বিষ্ময়কার অনুভূতি 
কালবৈশাখির ভয়ঙ্কর থাবা অথবা একটি বুলেট 
হৃদয় থেকে পারে কি মুছে দিতে?

উড়ন্ত পতাকার লাল বৃত্তে যার রক্ত মিশে আছে
ঘন সবুজের মাঝে লুকিয়ে আছে যার সোনার বাংলার স্বপ্ন
বাঙালির স্পন্দিত শিরা-উপশিরায় গর্জে ওঠা পাহাড় ফাটা বজ্জ্রকণ্ঠ
কালজয়ী মহান পূরুষ অথবা সময়ের সুতীব্র প্রয়োজন
উদ্ভ্রান্ত নরখাদকের নগ্ন সিদ্ধান্তে অথবা ঘাতকের বিষাক্ত বিষ নিঃশ্বাসে
হৃদয় থেকে তাকে পারে কি মুছে দিতে?

অবারিত সবুজ ফসলের মাঠ, উন্মুক্ত সুনীল আকাশ
মৃত্তিকার ধমনীতে প্রবাহমান ছলাৎ ছলাৎ জলতরঙ্গ
গৃহত্যাগি বাউলের একতারা, মাঝির ভাটিয়ালি গান 
দিবস-রজনী আরাধনা করে তোমার জীবন্ত অস্তিত্বের
তুমি কোটি মানুষের হৃদয়ে পেয়োছে ঠাঁই, তুমি কালজয়ী মহামfনব 
তোমার মুত্যু নাই, মৃত্যু নাই, মৃত্যু নাই।

আমাদের পতাকার মতো তুমি সত্য, সবুজের বুকে তুমি লাল টকটকে  বৃত্ত
আমাদের মহান স্বাধীনতা, শ্যামল প্রকৃতি, সোনালি রোদ্দুরের মতো তুমি সত্য
আমার দৈনিন্দন বেঁচে থাকায়, আটপৌরে স্বপ্ন দেখায় তুমি মিশে আছো
কোনো ভূ্ঁইফোঁড় দেশদ্রোহীর রোষানল, গাদ্দারের অভিশপ্ত নিষ্ঠুর বুলেট
গৃহপালিত বিভিষণ, কিম্বা ঘৃণার সাইক্লোন
মানুষের ভালোবাসা থেকে তোমাকে উঁপড়ে ফেলতে পারে কি?
পারেনি, পারবে না কখনো।

হে পিতা, তুমি সন্তানের হাতে প্রাণ সঁপে দিয়ে সন্তানকে দিলে শিক্ষা
দীক্ষা নিয়ে আজকে হলে বীর বাঙালির সার্বজনীন যিশু
পিতৃ হত্যার কষ্ট নিয়ে কাঁদছে এখন জাতি, কাঁদছে বিশ্ববাসী
বুকের ভিতোর অগ্নি নিনাদ, বহ্ণি শিখায় কাঁপছে খুনির ত্রাহি ত্রাহি প্রাণ
ওরা এখন ঘৃণার আগুনে দগ্ধ হয়ে ধুকতে ধুকতে মরছে এবং মরবে।
আমরা ওদের ছাড়িনি জাতির পিতা, ঘৃণা ওদের ছাড়বে না কোনোদিন।

হাজার বছরের শ্রেষ্ট বাঙালি ,বাঙালি জাতির পরম শ্রদ্ধেয় পিতা
বিশ্ববাসীর অবাক বিষ্ময়, বিশ্ব কাঁপানো অকুতোভয় নেতা।
বুকের গহীন অতল থেকে এনেছি আমার অশ্রুসিক্ত শ্রদ্ধা
কাঙ্ক্ষিত অক্সিজেনের মতো তুমি মিশে আছো, 
তুমি কালজয়ী মহা ইতিহাস; তুমি বাঙালি জাতির পিতা, 
তোমার মুত্যু নাই, মৃত্যু নাই, মৃত্যু নাই...
মৃত্যুহীন আদর্শ হয়ে
তুমি মিশে রবে আমাদের ধমনিতে নিঃশ্বাসে ও বিশ্বাসে । 

১৫ আগস্ট ২০১০ খ্রি.
খুলনা

অপেক্ষা

  অপেক্ষা ই ম রু ল কা য়ে স মাঘের হিমবাহ শেষে এলো ফাগুন, এলো বসন্ত বসন্তের আগমনে পুষ্পে পুষ্পে ভরে গেলো বিষন্ন প্রকৃতি; প্রজাপতি রঙ ছড়ালো,...