চেতনায় কাজী নজরুল
ইমরুল কায়েস
ইমরুল কায়েস
হিমালয় থেকে বঙ্গোপসাগর, মানুষের মননে মননে
বিদ্রোহের ঝঙ্কার তুলে কাঁপিয়ে দিয়েছিল
যে আলোক বিচ্ছুরিত ক্ষণজন্মা ধুমকেতু,
বাঙলা সাহিত্যে তার নাম, ‘কাজী নজরুল’।
বিংশ শতাব্দীর মশাল হাতে তুমি এক স্বতন্ত্র কবিসত্তা। তুমি বাঙলা সাহিত্যে এনেদিলে এক নতুন ভোর,
নতুন প্রভায় প্রদীপ্ত, স্বমহিমায় সমুজ্জ্বল কবিপ্রতিভা।
স্বর্গের অদৃশ্য সিঁড়ি বেয়ে, মানবতার বারতা নিয়ে
তুমি এসেছিলে এই বাংলার শ্যামল প্রান্তরে;
মেঘে ঢাকা আকাশে তুমি এক নতুন নক্ষত্র।
তুমি এক হাতে নিয়েছিলে বিদ্রোহী রণতূর্য
মায়াবী বাঁশের বাঁশরী ছিল তোমার অন্য হাতে;
মিলনের সুর তুলে, শ্রেণি-বিভেদ ভুলে
অজস্র নিশি জেগে, ঘুমন্ত গণমানুষের কানে
তুমি গেয়েছিলে ঘুম ভাঙানো গান।
শতাব্দীর মানবিক জঞ্জাল সরাতে সরাতে
সভ্যতার আঁধার ঘোঁচাতে ঘোঁচাতে
জলন্ত প্রদীপ হয়ে তুমি এসেছিলে এই ধরণীতে।
যে প্রেম দিতে ও নিতে তুমি এসেছিলে লোকালয়ে,
তা পাওনি বলে তোমার অনেক দুঃখ থাকার কথা
যে প্রেম তুমি দিয়ে গেছো নীরবে, নিঃভৃতে
হৃদয়ের শান্ত সৈকতে বাঙালি তা রেখেছে ধরে;
ক্ষুধায়-তৃষ্ণায়, দুর্যোগের মহাতান্ডবে
তাই তো এখনো বেঁচে থাকার স্বপ্ন দেখি।
অত্যাচারীর ভয়ঙ্কর কালো হাত থামাতে,
শ্রেণি-হীন, বৈষম্যহীন নতুন সমাজ গঠনে
এই সময়ে তুমি এক অপরিহার্য শৈল্পিক অনুষঙ্গ।
নির্যাতিত-অনাহারী মানুষের কান্ডারী,
হে বিদ্রোহী কবি নজরুল, শ্রদ্ধাঞ্জলি তোমাকে।
জ্বলন্ত নক্ষত্রের মতো, চিরকাল
তুমি মিশে রবে আমাদের অস্তিত্বে, আমাদের চেতনায়।