Monday, July 31, 2023

লিকলিকে মেয়ে


লিকলিকে মেয়ে
ই ম রু ল  কা য়ে স

লিকলিকে মেয়ে
তোমাকে ছাড়া এই অঝোর শ্রাবণ বড় একা একা লাগে।

কখনো ভাবিনি তুমি হতে পারো অবাধ্য আমার,
নিমেষেই সরে যেতে পারো দৃষ্টির ওপারে!
ভালোবাসা ছাড়া তোমাকে আর কী দিয়েছি উপহার!
কাঁটার আঘাত সয়ে গোলাপের ঘ্রাণ নিতে
তুমিই তো শিখিয়েছিলে প্রথম যৌবনে।

রক্তাক্ত হয়েছে, হৃদয় মায়াবী বিরহ-কাঁটায়।
পোড়া যৌবন মগজের ঘরোয়া মানচিত্রে 
নিভৃতে এঁকেছিল তোমারই তো আল্পনা!

শুধু সামনেই এগিয়ে গেলে একা !
ডানে-বামে-পশ্চাতে তাকানোর সময় 
তোমার কখনো কি হলো?
পড়েছো তো বিজ্ঞান, ব্যবহারিক ক্লাসে 
হয় তো দেখেছো মাংশল হৃদপিণ্ড, দেখোনি হৃদয়!
একবারও তো বোঝোনি, 
কবির হৃদরক্তেই লাল হয়েছে গোলাপের পাপড়ি।
অথচ সেই গোলাপই এখন কবিকে চেনে না!

এই ভেজা শ্রাবণে, অশ্রুপ্লাবনে, অহর্নিশ ভিজছি।
রাতভর বিৃষ্টিতে ভিজে গেলো দাঁড়কাক
ভিজে গেলে মানুষ, পশুপাখি, ধানক্ষেত
শুধু, ভিজলো না তোমার দ্যোদুল্যমান পাথর হৃদয়।

২৩ আগস্ট ২০০২ খ্রি.
খুলনা










Saturday, July 15, 2023

বাড়ি নম্বর চুয়াল্লিশ

বাড়ি নম্বর চুয়াল্লিশ
ই ম রু ল  কা য়ে স

চেনা স্বপ্নগুলো প্রতি মাঝরাতে 
দলবেঁধে পাখা মেলে সাঁই সাঁই উড়ে যায়,
প্রভাত হলেই তৃপ্ত অবয়বে ফিরে আসে ঘরে।

আমি বহুবার করেছি অপেক্ষা
বহু নিশি জেগে, করজোড়ে চেয়েছি জানতে
নিটোল অমানিশা বুকে ঠেলে দূরে, হরিণী চঞ্চলতা নিয়ে
নিঃভৃতে নির্জনে কোথা যায় ওরা?
উত্তর একটাই, `বাড়ি নম্বর চুয়াল্লিশ'।

আমি - বারবার অনুনয় করে বলেছি 
গহীন রাতে কারো বাড়ির অন্দরে করবে না প্রবেশ,
কোনো - মানবীর শরীরের ঘ্রাণ শুঁকবে না আর,
শিয়রের পাশে বসে নিঃস্বার্থ ভালোবেসে
রাত জেগে কাউকেই করবে না আদর।

ওরা না শোনে বাঁধা, না মানে বারণ।
প্রতি রাতে পাখা মেলে সাঁই সাঁই উড়ে যায়।

আমি - বসন্তের বিরহী কোকিলের মতো 
একা একা জেগে থাকি ঘরে,
জানালার ফাঁক দিয়ে আকাশ পানে চেয়ে চেয়ে ভাবি-
কখন শান্ত হবে আঁখি? 
আঁখির পাপড়িগুলো মিলে যাবে ওদেরই মায়বিী ওমে। 
কখন আসবে ফিরে পোষা সেই স্বপ্নগুলো
পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ মানবীর শরীরের গন্ধ মেখে ডানায়।

২৩ আগস্ট ২০০১ খ্রি.
খুলনা

Friday, July 14, 2023

নীলগঞ্জের মেয়ে

নীলগঞ্জের মেয়ে
ই ম রু ল  কা য়ে স

পৌষের পড়ন্ত বিকেলে
মেঘের আঁচল ছিঁড়ে খসে পড়লো একফাঁলি সোনালি রোদ্দুর
আড়মোড়া ভেঙে ঘোমটা খুলে
খিলখিল করে হেসে উঠলো হলুদ সরিষার ক্ষেত।
দলবেঁধে ছুটে এলো ফেলে আসা স্মৃতির বহর
টেনে নিল অবসন্ন হৃদয়ের এক চিলতে শুষ্ক উঠোনে।
বহুদিন পর আকাশ হয়ে উঠলো গাঢ় নীল।
জলাসক্ত মেঘ, মেঘাসক্ত নীলাকাশ
আকাশের পাদদেশে অগোছালো লাজুক রোদ্দুর।

সেদিনের সেই সোনামাখা রৌদ্রের স্নান শেষে
স্বপ্নাতুর চোখ নিয়ে হঠাৎ সামনে এসে দাঁড়ালো
তুলনাহীন, উপমাহীন, আটপৌরে এক শহুরে মেয়ে।
ভীষণ অদ্ভুত সেই মিষ্টি মেয়ের মুখাবয়ব
প্রাচীন মিশরীয় বর্ণমালার মতো দুর্বোধ্য 
তার অব্যক্ত অভিব্যক্তি, হরিণী দৃষ্টি।
টানা টানা দু’টি চোখ অব্যক্ত বিষ্ময়ে ভরা
বড় শান্ত, বড় মনোহর তার চলার ভঙ্গি
যেন অতল সমুদ্রের সন্ধানে 
ধাবমান কুমারী পাহাড়ি ঝর্ণা এক।

মেয়েটির মুখোমখি হতেই হয়ে গেলো ভাসাভাসা পরিচয়
তারপর রৌদ্রে স্নান, স্বপ্নে অবগাহন
চঞ্চল প্রজাপতির মতো উড়ে উড়ে, ঘুরে ঘুরে দেখা হলো চারপাশ
সরিষার ফুলে ঠাসা সবুজ খেসারি ক্ষেত
চিত্রার তীরঘেঁষা সর্পিল মেঠোপথ
জীর্ণ শীর্ণ জমিদার বাড়ি, রাজমন্দির, শিশুস্বর্গ সবখানে...
যেখানের পথে পথে খেলা করে প্রতিদিন
 বিশ্ববরেণ্য চিত্রশিল্পী এস এম সুলতানের বাল্যস্মৃতিরা ।

ক্ষণিক দেখা সেই মিষ্টি মেয়েটির বাড়ি যশোরের নীলগঞ্জে
মনিহার সিনেমা হলের আশে-পাশে হয়তো।

মাত্র একটি বার তার সাথে হয়েছিল দেখা
মাত্র একটি বিকেল সে আমাকে দিয়েছিল উপহার
একটি রোমাঞ্চকর সন্ধ্যা সে আমাকে করেছিল পরিপূর্ণ দান
অথচ স্মৃতির  এ্যালবামে সে আজো অক্ষয় , চির অম্লান!

ভালো থাকুক নীলগঞ্জ।
ভালো থাকুক নীলগঞ্জের দুরন্ত কিশোরীরা।


২৫ ডিসেম্বর ২০০৫ খ্রি.
নড়াইল

অপেক্ষা

  অপেক্ষা ই ম রু ল কা য়ে স মাঘের হিমবাহ শেষে এলো ফাগুন, এলো বসন্ত বসন্তের আগমনে পুষ্পে পুষ্পে ভরে গেলো বিষন্ন প্রকৃতি; প্রজাপতি রঙ ছড়ালো,...